জয় লিখেছেন, ‘আমি যথেষ্ট আস্থা নিয়ে বলতে পারি, বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় হবে। সিলেটেও আমরা সামান্য এগিয়ে। তবে সেখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, নির্বাচনের আগে পুরো জুলাই মাসে স্বতন্ত্র রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিন সিটিতে তিনি এই জরিপ করান।
আরডিসি’র জনমত জরিপে দেখা গেছে, বরিশালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোটার। বিএনপির মুজিবুর রহমান সারোয়ারের প্রতি ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। এখানে কাকে ভোট দেবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেয়া ভোটারের সংখ্যা ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি- এমন ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ। মোট ১ হাজার ২৪১ জন ভোটার এই জরিপে অংশ নেন।
আরডিসি’র করা জরিপে তিন সিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি পেতে পারেন মোট ভোটের ৫৮ শতাংশ। আর বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পাবেন ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। এখানে সিদ্ধান্ত না নেয়া ও প্রশ্নের উত্তর দিতে না চাওয়া ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এ শহরে ১ হাজার ২৯৪ জন ভোটার অংশ নেন।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, সিলেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ৩৩ শতাংশ ভোট পেতে পারেন বলে জানানো হয়েছে। আর বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী পাবেন ২৮ দশমিক ১ শতাংশ।
এই শহরে সিদ্ধান্ত না নেয়া ভোটারের সংখ্যা সবেচেয়ে বেশি, ২৩ শতাংশ। জরিপে অংশ নেন ১ হাজার ১৯৬ জন ভোটার।
এই গবেষণার পদ্ধতি এবং জরিপের কৌশলগত নানা দিকও তুলে ধরেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি লিখেছেন, তিন সিটির ভোটার তালিকা ধরেই এ জরিপ হয়েছে। সেখানে আদমশুমারিতে জনসংখ্যার লিঙ্গভিত্তিক যে ধরন আছে, তার ওপর ভিত্তি করেই এ জরিপ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে থেকেই জরিপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপে এটা নিশ্চিত করা হয়েছে যে অংশগ্রহণকারীরা তিনি সিটির ভোটার। এখানে গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা (margin of error) হলো ২ দশমিক ৫।
সজীব ওয়াজেদ লিখেছেন, গত পাঁচ বছর ধরে আরডিসি’র মাধ্যমে আমরা জরিপ পরিচালনা করছি। তাদের জরিপের পদ্ধতি ও ফলাফল বরাবরই আমার সঠিক মনে হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যেহেতু জরিপগুলো গত এক মাস ধরে করা হয়েছে এবং এর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা জোরেশোরে চলেছে। তাই জরিপ ও নির্বাচনের ফলাফলে কিছুটা তফাৎ হতে পারে। কিন্তু, আমি আত্মবিশ্বাসী যে বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ বিশাল ব্যবধানে জয়ের পথে। যদিও সিলেটে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি, এই মুহূর্তে আসলে কাউকেই বিজয়ী হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বিএনপি অনেক ধরনের অভিযোগ করতে থাকে। কিন্তু, আসল কথা হচ্ছে, তাদের কোনো জনপ্রিয়তাই নেই। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন দিন দিন বাড়ছে। নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই না।’
সজীব ওয়াজেদ জয় আরও বলেন, ‘আমি আমাদের দলীয় নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানাব, তারা যেন সজাগ থাকেন। কারণ, আমাদের আশঙ্কা বিএনপি ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে সেই দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা চালাবেন। আপনারা সবাই বিএনপি নেতাদের এইরূপ ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ সম্প্রতি শুনেছিলেন গাজীপুর নির্বাচনের সময়। বিএনপির প্রার্থীরা যতই ভোটারদের কাছে যান, ততই তারা বুঝতে পারেন তাদের দল বাংলাদেশের মানুষদের থেকে কতটা দূরে সরে গিয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের একমাত্র কৌশল।’