‘বিএনপি উদ্দেশ্যই ছিল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বহির্বিশ্বে সরকারের ইমেজ নষ্ট করা’

ঢাকা: তিন সিটির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তিন সিটিতে বিএনপি নির্বাচনের জন্য অংশ নেয়নি। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বহির্বিশ্বে সরকারের ইমেজ নষ্ট করা। বিএনপি তিন সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নামে অভিনয় করেছে। তারা আগেই ঠিক করে রেখেছে, সকালে কী বলবে, বিকালে কী বলবে।’

সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটারদের ভোটদানের ইতিবাচক প্রবণতা আপনারা সবাই লক্ষ করছেন। কিন্তু বিএনপি তাদের অভিযোগের পুরাতন রেকর্ড বাজিয়েই চলেছে। দলটি নীলনকশার নির্বাচনের যে অভিযোগ করেছে, তার জবাবে আমি বলবো, বিএনপি এতে অংশ নিয়েছে নির্বাচনকে জনগণ ও বিদেশিদের কাছে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে। এটি তাদের নীলনকশা।’

এ সময় বিএনপি অনিয়মের যে অভিযোগগুলো করছে, সেগুলো তারা আগে থেকেই লিখে রেখেছিল বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

বিএনপির দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা নয়াপল্টনে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগকালে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়িয়েছেন। মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন তিনটি সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থীরা। এমনকী নিজেদের লোক দিয়ে গণ্ডগোল সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত করাই ছিল বিএনপির মূল টার্গেট। আজকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যা দিবালোকের মতো পরিষ্কার।’

নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য ছিল অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ যদি প্রতিযোগিতা ভেস্তে দিতে মাঠে নামে, তাহলে কি কিছু করার থাকে? কেউ যদি স্রেফ অভিযোগের পসরা সাজিয়ে মিথ্যাচার শুরু করে, পরাজয়ের জন্য নিজের ক্ষেত্র তৈরি করতে মরিয়া থাকে এবং মিডিয়ার ফাঁদে ফেলে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়, তাহলে কি করার আছে?’ তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন রাজশাহীতে বিএনপির প্রার্থী ভোট না দিয়ে সারাদিন নাটক করেছেন। বরিশালে বিএনপির প্রার্থী মজিবুর রহমান সারোয়ার তার বাড়ির সামনে গত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত যেসব কর্মকাণ্ড করেছেন, তা দেখে বোঝা যায়, তিনি নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তার যে অভিযোগগুলো, সেগুলো আগেই তিনি লিখে রেখেছিলেন। তারা আগেই নির্ধারণ করেছিলেন, সকালে কী বলবেন, দুপুরে কী বলবেন এবং নির্বাচন শেষ হলে কী বলবেন!’

তিন সিটিতেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজশাহী ও বরিশালে ইভিএম রেজাল্টে আমরা এগিয়ে। সিলেটে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি, তাতে এখন পর্যন্ত আমরা তিন সিটিতেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য রাশেদুল আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা প্রমুখ।