আমীর খসরুর কথায় অপরাধ কিছু নেই: ফখরুল

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর যে কথোপকথন ফাঁস হয়েছে তাতে কোনো অপরাধ দেখছেন না মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘এটা অপরাধ কোথায়। সমস্ত দেশই তো তাদের পক্ষে। আমরা আগেই শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছিলাম। শিক্ষণীয় আন্দোলন করছে তারা। দেশের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ, বুদ্ধিজীবী সবাই বলছে যৌক্তিক। তবে তার (আমির খসরু) কথা বিকৃত করে ছেড়ে দেয়ার সম্ভবনাই বেশি। কারণ এখন তো সবই করা যায়।’

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গত এক সপ্তাহ ধরে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বিএনপি চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি করার মধ্যে শনিবার দুপুরে একটি অডিও আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ওই অডিওতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নওমি নামের একজনের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে আমীর খসরু ঢাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে লোকজন নামানোর জন্য নওমিকে নির্দেশ দেন।

ভাইরাল হওয়া ওই অডিও কথোপকথনটি বিএনপি নেতা আমীর খসরুর কণ্ঠ বলে দাবি করা হলেও আমীর খসরু এটিকে বানোয়াট বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার (আমির খসরুর) কথোপকথনের জের ধরে গতকাল রাতে দুইবার অভিযান চালানো হয়েছে গ্রেপ্তার করার জন্য। কিন্তু কেন তিনি তো সাবেক মন্ত্রী। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে বললে অপরাধের কিছু নেই।’

‘এটিকে কেন্দ্র করে গতকাল ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে। এগুলো সবই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর অভিযানের শামিল। গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপিকে নিয়ে যে ভাষায় কথা বলছে, তা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই করা হচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল ধানমন্ডিতে নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। সারাদেশেই এই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে তারা। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ অনির্বাচিত স্বৈরাচারী সন্ত্রাসী দল। তাদের কাছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের কোনো মূল্য নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারে বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের উপর হামলা করা হয়েছে দাবি করে এজন্য আওয়ামী লীগতে দায়ী করেন ফখরুল।

বলেন, ‘গতকাল রাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মাদপুরের বাসায় নৈশভোজে গিয়েছিলেন। তার আগেই সেখানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জড়ো হয়েছিল। তিনি বের হলে তার উপর হামলা চালানো হয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপর এই হামলা মার্কিন রাষ্ট্রের উপর হামলার শামিল। এই হামলায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করেছে। আমরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীর গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম প্রমুখ।