আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১/১১’র কুশীলবরা আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে। মঙ্গলবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থী ঘরে ফিরে গেছে। কিন্তু এসময় দেশকে অশান্ত করার জন্য সারাদেশ থেকে তাদের ক্যাডারদেরকে এনে ঢাকা অচল কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। ঢাকা অচল করে বাংলাদেশ অচল করার পরিকল্পনা তাদের ছিল এবং আছে।
তিনি বলেন, দেশে যখন শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করেছিল ঠিক সেই সময়ে ১/১১ কুশীলবরা আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে বিধ্বংসী রাজনীতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আজকে অনেকই অনাবশ্যক কটূ ভাষণ দিচ্ছে। কটূ ভাষণ দিয়ে তারা রাজনীতিকে দূষিত করছেন। রাজনীতিতে মতান্তর থাকবেই, কিন্তু সেই মতান্তরকে ছদ্মবেশী রাজনীতিকরা বিধ্বংসী মতান্তরের সীমা অতিক্রম করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা দেশ, জাতি, গণতন্ত্র ও ভবিষ্যতের জন্য দুঃসংবাদ।
এসময় বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা ক্ষমতার জন্য দেশকে ধ্বংস করার রাজনীতি করে, তাদের সঙ্গে কি করে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে- তা ভেবে পাই না। অন্দোলনে তাদের সফলতা দেখলাম না। আন্দোলনে ব্যর্থ এ দল কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভর করেছে, কিন্তু সেখানেও তারা ব্যর্থ। এখন তারা শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনের উপর ভর করেছে। সেটাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার পথে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা আর কত ষড়যন্ত্র করবে, চক্রান্ত করবে? এখন ১/১১’র কুশীলবদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন করে কোনো জাল বুনা যায় কিনা সেই গোপন চক্রান্ত তারা করছে।
তিনি বলেন, কোথায় কী হচ্ছে সেটা আমরা জানি। দেশে হচ্ছে, বিদেশে হচ্ছে। প্রথম প্রহরে, মধ্য প্রহরে, শেষ প্রহরে এবং রাতের অন্ধকারে হচ্ছে। সরকার কিছু জানে না, সেটা ভাবলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। সবকিছুই আমরা জানি। সবকিছুই আমাদের নলেজে আছে। কত ষড়যন্ত্র হয়েছে, কত বৈঠক হয়েছে; ব্যবস্থা নিলে কারো কারাগারের বাইরে থাকার কথা ছিল না। কিন্তু আমরা ধৈর্য্য ধরছি।
দেশে গুণ্ডাতন্ত্র চলছে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গুণ্ডাতন্ত্র কাকে বলে তা সবিনয়ে কামাল হোসেনকে জিজ্ঞেস করতে চাই? চোখ উপড়ে ফেলা হলো আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী আরাফাত বাপ্পীর। সেই আহত কর্মীকে হাইজ্যাক করলেন ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন, এসময়ে যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চান, তারা টার্গেট করেন সাংবাদিকদের। কারণ, সাংবাদিকদের টার্গেট করে ফায়দা তোলার চেষ্টা এ দেশে অনেকবার হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এটা হয়। আমাদের দেশেও আমরা তা বারবার লক্ষ্য করেছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল আমি সাংবাদিকদের বলেছি, ছাত্রলীগের উপর অপবাদ আসছে। আপনারা আমাকে তালিকা দিন। কারা কারা এতে জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থাও আমরা নেব।
এসময় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজীম আহমেদ সোহেল তাজের ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের রাজনীতির বাইরে আছেন। এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজ সংলগ্ন রাস্তায় আন্ডারপাস দ্রুততার সাথে নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রী এই আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।