যশোরে মণিরামপুরের মাছের আড়তের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন খুনের নেপথ্যে নানা কাহিনী শোনা যাচ্ছে। অজ্ঞাতনামা প্রেমিকার সাথে দেখা করাই তার জীবনের কাল হয়ে দাড়িয়েছে। নাকি ব্যবসায়ীক কোন লেনদেনের কারণে এই হত্যাকান্ড এমনই সব ঘটনা সামনে নিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার দুইদিন পার হলেও এই হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে খুব দ্রুতই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আটক এবং কারণ উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই শরীফ আল মামুন।
গতকাল মঙ্গলবার নিহত জসিম উদ্দিনের লাশের ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় নিহতের পিতা মণিরামপুর উপজেলার হাকোবা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মামলায় বলেছেন, তার ছেলে মণিরামপুর বাজারে ভাই ভাই গোল্ডেন ফিসে ম্যানেজার পদে চাকরি করতো। গত ২৬ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে আড়ত থেকে বের হয়ে তার বন্ধু একই উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রিপনকে সাথে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে যশোর শহরের ব্যাটারি পট্টিতে আসে। সেখানে আসার পরে অপরিচিত একটি মেয়েকে মোবাইল করে জসিম। মেয়েটি আসার পরে কিছু ফল কিনে দেয়ার পরে আবার চলে যায়। এরপরে জসিমউদ্দিন ও তার বন্ধু রিপন মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। শহরের বকচর কোল্ড স্টোর মোড়ে পৌছানো মাত্র একটি হাংক মোটরসাইকেলে তিনজন দুর্বৃত্ত এসে তাদের পথরোধ করে। এসময় জসিমকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত করে। এরপরে জসিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সাথে থাকা রিপন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে চলে যায়। পাশাপাশি রিপন মোবাইল করে জসিমের বাড়িতে সংবাদ দেয়। বাড়ি থেকে লোকজন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে জসিম উদ্দিনকে মৃত দেখতে পায়।
এদিকে এই ঘটনায় রাতেই পুলিশ রিপন ও জাকির হোসেন নামে দুইজনকে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল মঙ্গলবার তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য নিহত জসিম উদ্দিন যে মেয়েটির কাছে আসছিল তাকে সনাক্ত করার জন্য চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই মেয়েটির পরিচয় এবং যারা জসিমকে খুন করেছে তাদের সাথেও মেয়েটির কোন পরিচয় বা সম্পর্ক আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এছাড়া ব্যবসায়ীক কোন লেনদেন নিয়ে বিরোধ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তবে ২৬ জুন রাতে ঘটনাটি ঘটলেও ২৭ জুন বিকেলে নিহতের পিতা কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে মামলা করেছেন। কিন্তু ঘটনার দুইদিনেও হত্যার কারণ উদঘাটন এবং জড়িত অভিযোগে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
নিহতের ভাই নয়ন হোসেন জানিয়েছেন, সোমবার জসিম উদ্দিন খুন হওয়ার পরে মঙ্গলবার তার লাশের ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই শরীফ আল মামুন জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয়টি এই হত্যাকান্ডটি তদন্ত করা হচ্ছে।
তবে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল আলম চৌধুরী বলেছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের আটকের জন্য একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।