যশোরে শিশুসহ গৃহবধূকে ভারতে পাচারের অভিযোগ,বিধবা মায়ের আহাজারী

ভারতে ভাল বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে মা মেয়ে মিলে একটি পাচারকারী চক্র গৃহবধূ মোছাঃ শাহারিন খাতুন (২২) ও তার শিশু ছেলে তৌসিফ (৯মাস) কে ভারতের বোম্বে পাচার করেছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর মাতা বিধবা মোছাঃ শিরিনা খাতুনসহ পরিবারের লোকজন দিশেহারা হয়ে কোতয়ালি থানার স্মরনাপন্ন হয়েও মেয়ের সন্ধান করতে না পেরে চরমভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। ঘটনাটি যশোর সদর উপজেলার ১২ নং ফতেপুর ইউনিয়নের পুর্ব চাঁদপাড়া গ্রামের। ঘটনার পরপর বিধবা শিরিনা খাতুন কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মেয়ে ও নাতনীর সন্ধান না পাওয়ায় চরমভাবে ভেঙ্গে পড়েছে।

যশোর সদরের পুর্ব চাঁদপাড়া গ্রামের মৃত মাসুদ মোল্যার স্ত্রী মোছাঃ শিরিনা খাতুন থানায় অভিযোগে বলেছেন,তার মেয়ে মোছাঃ শাহারিন খাতুন (২২)কে সদর উপজেলার জলকার গ্রামের মৃত ছিদ্দিক চাকলাদারের ছেলে সজীব হোসেনের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান আসে তার নাম তৌসিফ। বাদির মেয়ে ঘর সংসার করাকালে সদর উপজেলার বাউলিয়া মেইন রোডের পাশে হাশেম মোল্যার স্ত্রী মোছাঃ শুকুরোন বেগম ও তার দুই মেয়ে মোছাঃ সালমা খাতুন ও মোছাঃ সেলিনা খাতুন এলাকার চিহ্নিত মানব পাচারকারী। সালমা খাতুন ও সেলিনা খাতুন প্রায় সময় ভারতে আসা যাওয়া করে। তারা বিভিন্ন অসহায় গরীব লোকজনদেরকে ভাল বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ভারতের বোম্বে পাঠায়। মা মেয়ে মিলে মাবন পাচারকারী চক্র বাদির বিবাহিতা মেয়েকে প্রায়ই সময় বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ভারতে নিয়ে যেয়ে ভাল বেতনে চাকুরী দিবে বলে ফুসলাতো। ফুসলানোর এক পর্যায় গত ২৬ মে সকালে পাচারকারী চক্রের প্রধান মোছাঃ শুকুরোন বেগম ও তার মেয়ে মোছাঃ সেলিনা খাতুন বাদির বাড়িতে এসে বাদির বিবাহিতা মেয়ে শাহারিন খাতুনকে ভালবেতনে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ফুসলিয়ে বাড়ি হতে নিয়ে বাদির বিবাহিতা মেয়ে ও তার শিশু সন্তানকে ভারতের বোম্বে পাচার করেছে। বাদির মেয়ের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পাচারকারী শুকুরোন বেগম ও সেলিনা খাতুনের কাছে বাদি তার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সঠিক তথ্য না দিয়ে একেক সময় একেক ধরনের কথাবার্তা বলছে এবংবাদির পরিবারকে হুমকী ধামকী দিয়ে বলছে বেশী বাড়াবাড়ি করলে চরম সমস্যায় পড়তে হবে বলে হুমকী ধামকী অব্যাহত রেখেছে। মা মেয়ে মিলে একটি মানব পাচারকারী চক্র পরস্পর যোগসাজস করে অসৎ উদ্দেশ্যে বাদির মেয়ে মোছাঃ শাহারিন খাতুনকে ভারতে পাচার করে বাদির মেয়েসহ তার শিশু সন্তানকে যে কোন সময়ে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে বলে বাদি আশংকা প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে কোতয়ালি থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ নামা থানার এসআই তুহিন বাওয়ালীর উপর তদন্তভার দেন। তুহিন বাওয়ালী গৃহবধূ শাহারিন খাতুন ও তার শিশু ছেলেকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। বাদির পরিবার এসআই তুহিনকে খুশি করতে ছাগল বিক্রি করে কয়েক হাজার টাকা প্রদান করেন। তুহিন বাওয়ালী অভিযোগকারীদের অবস্থান সনাক্ত করতে মোবাইলের মাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সন্ধান করতে পারেনি ও পাচারের শিকার গৃহবধূর পরিবারকে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ভারত থেকে উদ্ধারের কথা বলেন এ প্রতিবেদককে । বিধবা নারীর অভিযোগ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামীদের মোবাইলের নাম্বার ট্রাকিং করে কোন সন্ধান পাচ্ছেন না। অভিযোগকারীরা ভারতে থাকায় তিনি নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। তিনি বাদিকে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ভারত থেকে তার পাচার হওয়া মেয়ে মোছাঃ শাহারিন খাতুন ও শিশু ছেলে তৌসিফকে উদ্ধারের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানাগেছে।#