কৃষক ও কায়েতখালী বাওড়ের সাবেক নৈশ্য প্রহরী রহিম লস্কার (৫২) হত্যাকান্ডের ঘটনায় রোববার ৯ জুলাই সকায়ে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। রহিম লস্কারের স্ত্রী যশোর সদর উপজেলার ছোট বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোছাঃ সুকুরন নেছা বাদি হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ তাদের অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭জন উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হচ্ছে,সদর উপজেলার কায়েতখালী গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে রাসেল হোসেন, সাইফুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন, মৃত আমির আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সিদ্দিক আলীর ছেলে হাসানুজ্জামান ইসলাম, নূর ইসলামের ছেলে হাবিল ওরফে বার্মিজ,আমির আলীর ছেলে মামুন, মৃত আজিদের ছেলে মুছা, শহিদুল ইসলামের ছেলে সুমন হোসেন, ইছালী গ্রামের মৃত মতলেব এর ছেলে রাসেল, সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের সিরাজের ছেলে নুর ইসলাম আলো, হাশিমপুর বাজারপাড়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আয়ূব আলী, রবিউল ইসলামের ছেলে মাসুমসহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, বাদির স্বামী রহিম লস্কার কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পূর্বে কায়েতখালী বাওড়ের নাইটগার্ড হিসেবে বাওড় পাহারা দিতো। রহিম লস্কার বাওড় পাহারা দেওয়াকালে আসামীরা প্রায় সময় চুরি করে বাওড় হতে মাছ মেরে নিতো। বাদির স্বামী বাওড়ের পাহারাদার হিসেবে নিয়োজিত থকাকালে আসামীদের বাধা নিষেধ করতে আসামীরা বাদির স্বামীকে মারপিট খুন জখম করার হুমকী প্রদর্শন করতো। বর্তমান মৌসুমে আসামীরা উল্লেখিত বাওড়ে মাছের চাষ করছে। বাওড়ের পাশে বাদির পরিবারের নিজেস্ব জমি আছে। বর্তমান জলামগ্নতার কারনে আসামীদের বাাওড়সহ বিভিন্ন জায়গা হতে বাদির পরিবারের জমিতে বিভিন্ন প্রকারের মাছ আসায় বাদির স্বামী মাঝেমধ্যে রাত্রে আলো কাটায় বাদির জমি হতে মাছ মারতো। বাদির স্বামী বিভিন্ন সময়ে মাছ মারতে গেলে আসামীরা বাধা নিষেধ করাসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকী প্রদর্শন এমনকি মারপিট খুন জখম করার জন্য বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। গত ৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টায় রহিম লস্কারসহ বাদির গ্রামের মৃত সমশ খাঁ, এর ছেলে বাবু খাঁ ও ইসরাইল হোসেন খাঁ কায়েতখালী বাওড়ের অনুমান ২শ’ থেকে ৩শ’ ফুট দূরে বাদির পরিবারের নিজস্ব মালিকানা জমি হতে আলো কাটার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছ ধরতে থাকাকালে গভীর রাত ২ টায় ৭ জুলাই আসামীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো দা,চবক, লোহার রড ও অস্ত্রশস্ত্রসহকালে বাদির স্বামী ও তার সাথে থাকা দুইভাইকে খুন করার উদ্দেশ্যে আক্রমন করলে বাদির স্বামীসহ তার সাথে থাকা দুই ভাই টর্চ লাইটের আলোতে আসামীদের দেখে সনাক্ত করে। আসামীদের মধ্যে কিছু আসামী সংঘবদ্ধ ও হাতে দেশীয বিভিন্ন অস্ত্রসহকারে তাড়া করায় বাদির স্বামীসহ তার সাথে থাকা অবস্থা খারাপ বুঝে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য যে যার মতো দিক বিদিক দৌড়ে বাড়িতে চলে আসে। কিন্ত বাদির স্বামী রাতে বাড়িতে ফেরে না। বাদির পরিবারের অন্যান্য সদ্যরা খোজাখুজি করার এক পর্যায় শুক্রবার ৭ জুলাই সকাল ১১ টায় সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের আবু বক্কারের ঘেরের পূর্ব পাশে ভেড়ীর উপর বাদির স্বামীর মরদেহ পাওয়া যায়। বাদি ঘটনাস্থলে যেয়ে তার স্বামীকে সনাক্ত করেন। নিহত রহিম লস্কারের মুখ, কাধেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। সকল আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাদির স্বামীসহ তার সাথীদের ধাওয়া করার পর সাথীরা দৌড়ে যে যার বাড়িতে চলে গেলেও ৭ জুলাই রাত ২ টায় আড়পাড়া গ্রামের আবু বক্কারের ঘেরের পূর্ব পাশে ভেড়ীর উপর আসামীরা বাদির স্বামীকে ধরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহকারে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে মরদেহ ফেলে চলে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরনেল পূর্বে সুরোতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ রহিম লস্কারের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ এজাহার নামীয় আাসমী কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।#