সৌদি আরবের জাল আকামা দিয়ে মানব পাচার করার অভিযোগে যশোরে মামলা

প্রতারনার মাধ্যমে সৌদি আরবের জাল আকামা দিয়ে সৌদি আরবে পাচার করার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি থানায় শনিবার দিবাগত গভীর রাতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ছোট গোপাল পুর গ্রামের পরশতুল্য চাকলাদারের ছেলে রাশেদুল ইসলাম। মামলায় আসামী করেন, সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম। বাদির দায়ের করা পিটিশন জেলা ও দায়রা জজ মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ যশোর এর বিজ্ঞ বিচারক জনাব মোঃ গোলাম কবিরের নির্দেশে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি রেকর্ড করেন।

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,বাদি যশোরস্থ খুলনা বাসস্ট্যান্ডের তালতলায় চায়ের দোকানদারী করতো। আসামী শরিফুল ইসলাম বাদির চাচাতো মামাতো ভাই এবং পাশপাশি গ্রামের লোক। শরিফুল ইসলাম বাদিকে বলে যে, সৌদি আলবে তার নিজস্ব লোক আছে। তার সাথে শরিফুল ইসলামের কথাবার্তা হয়েছে। বাদি যদি আসামীকে ৫লাখ টাকা দিতে পারে তাহলে আসামী বাদিতে বৈধ ভিসায় মাসিক ৪৫ হাজার টাকা বেতনে ৩ বছরে বৈধ আকামা ( ওয়ার্ক পারমিট) প্রদানের মাধ্যমে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে বাদিকে চাকুরী দিতে পারে। আসামী বাদিকে আরো জানায় যে, ওভার টাইম কাজের সুযোগসহ মেয়াদ আন্তে ভিসা ও আকামা নবায়ন করা যাবে।

চায়ের দোকানের ব্যবসা ভালো না চলায় আসামীর কথা রাজী হয়ে ৫লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবের রিয়াদে চাকুরীতে যেতে রাজী হয় বাদি। অতঃপর বাদী নিজেই নিজের পাসপোর্ট তেরী করে আসামীকে দেয়। আসামী টাকা চাইলে নগদ টাকা না থাকায় বাদির মাতা জহুরুন নেছা তার পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রয় করে আসামীকে ৩লাখ টাকা দেয়। পরে যশোর প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখা হতে লোন তুলে আসামীকে আরো ২লাখ টাকা প্রদান করলে আসামী বাদির বাড়িতে গত বছরের ১৭ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় এসে সৌদির উদ্দেশ্যে বাদিকে নিয়ে যায়। ১৮ ডিসেম্বর বিমানে উঠিয়ে দিলে বাদি সৌদি আরবে পৌছালে সেখানে আসামীর লোক বাদিকে সৌদি বিমান বন্দর হতে নিয়ে যায়। আসামীর এজেন্টের লোকজন বাদিকে একটি ঘরে আটকে রেখে বাদির শ^শুর রাশেদ আলীকে বাংলাদেশ হতে আবারও ৫লাখ টাকা পাঠাতে বলে।

৫লাখ টাকা না পাঠানোর কারনে বাদিকে সৌদি আরবে নির্যানের মুখে সেখানে টয়লেটে চাকুরী দেয়। পরে একটি আবাসিক হোটেলে চাকুরী দেয়। সৌদি আরবে বাদি হোটেলের কাজ শেষে বাদি ফেরার পথে সৌদি পুলিশ বাদিকে আটক করে আকামা দেখতে চাই। বাদি আকামা দেখালে সৌদি পুলিশ বাদিকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জেল খেটে সৌদি সরকার বাদিকে দেশে ফেরত পাঠায়। বাদি দেশে ফেরত এসে আসামীর কাছে যেয়ে বিষয়টি খুলে বলে এবং ৫লাখ টাকা ফেরত চাই। আসামী বাদিকে তাড়িয়ে দেয়। বাদি উপায়ূন্তর না পেয়ে থাকায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বাদি আদালতে আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে থানা কর্তৃপক্ষ বাদির পিটিশন মামলা হিসেবে রেকর্ড করেন।