যশোরে মাংস ব্যবসায়ীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে জনরোসে পুলিশ

একজন মাংস ব্যবসায়ীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা অভিযোগ উঠেছে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।বৃহস্পতিবার বড়বাজার কাঠেরপুলে মাংসের দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

যশোর শহরের বড়বাজার কাঠেরপুল এলাকার ব্যবসায়ীরা বলেছেন, স্থানীয় একটি মাংসের দোকানে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হাজির হন কোতয়ালি থানায় কর্মরত কনস্টেবল শিশির ও সদর ফাঁড়ির কনস্টেবল আনোয়ার। ওই দুই কনস্টেবল মাংস ব্যবসায়ী শামিমের দেহ,ব্যাগ ও দোকান তল্লাশি করেন। একপর্যায়ে তারা দোকানের শার্টারের ওপর থেকে কিছু ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে শামিমকে আটক করে নিয়ে যেতে চান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন শামীম একটি সিগারেট পর্যন্ত খান না। অথচ পুলিশ তাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত করছে।

এ সময় এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা পুলিশের দুই সদস্যকে ঘিরে ফেলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে কনস্টেবলরা বিষয়টি ফোনে তাদের কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি, ডিবিসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

সংবাদ পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি খোঁজখবর নিয়ে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি কাজী বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রাইমারি রিপোর্ট হলো, দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা ঠিক না। ’

যশোরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, কাঠেরপুলের একটি মাংসের দোকানে ইয়াবা আছে বলে গোপন খবর পেয়ে আমাদের মোবাইল টিম সেখানে অভিযান চালায়। সেখান থেকে কিছু ইয়াবা উদ্ধারও করা হয়। অফিসার ছাড়া দুই কনস্টেবল কোনো অভিযান চালাতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নে ভারপ্রাপ্ত এসপি বলেন, সেখানে অফিসারের নেতৃত্বে মোবাইল টিমও গিয়েছিল। এই ঘটনায় যে বা যারা দোষী হোক না কেন, কাউকেই নিষ্কৃতি দেয়া হবে না। তিনি বলেন ,যে ব্যক্তির দোকান থেকে ইয়াবা উদ্ধার দেখানো হচ্ছে, নথিপত্র ঘেঁটে তার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে দ্রুতবিচার আইনে একটি মামলা থাকার রেকর্ড রয়েছে বলে দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যশোরে যত্রতত্র মানুষের কাছে ইয়াবা গুঁজে দিয়ে গ্রেপ্তার করে মামলা ও অর্থবাণিজ্যের ঘটনা ঘটতো। সেসময় বেশ কিছু জায়গায় এমন ঘটনা ঘটাতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা জনতার রুদ্ররোষে পড়ে মারপিটের শিকারও হন।