চীনের প্রতি আমেরিকানদের মনোভাব কিছুটা ইতিবাচক হচ্ছে। যদিও বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ এখনো জারি রয়েছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি নতুন জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, চীন সম্পর্কে আমেরিকানদের নেতিবাচক মনোভাব ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে যেখানে ৮৪ শতাংশ আমেরিকান চীনকে নিয়ে বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন, ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৭ শতাংশে।
গত পাঁচ বছরে এই প্রথম এমন হ্রাস লক্ষ্য করা গেল। এই মনোভাবের পরিবর্তন এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্কারোপ নিয়ে অচলাবস্থায় রয়েছে, যার ফলে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ রয়েছে।
এর জবাবে বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস রপ্তানি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, দেশিয়ভাবে উৎপাদিত অন্যান্য পণ্যের বিরোধিতাও করেছে।
জরিপের তথ্য বলছে, প্রতি চারজন আমেরিকানের একজন মনে করেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কের সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছে চীন। ১০ শতাংশ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র বেশি উপকৃত, ২৫ শতাংশ মনে করেন উভয় দেশ সমানভাবে লাভবান হচ্ছে, ২ শতাংশ বলেছে কেউই লাভবান নয় এবং ১৬ শতাংশ এর উত্তর দিতে পারেনি।
তবে বেশিরভাগ উত্তরদাতা—৫২ শতাংশ—মনে করেন, এই শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হবে।
এর বিপরীতে, ২৪ শতাংশ বলেছেন এটি দেশের জন্য ভালো হবে, ৬ শতাংশ বলেছে এতে কোনো প্রভাব পড়বে না, আর ১৯ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চিত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি পারস্পরিক শুল্কারোপে ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করেন—তবে শুধুমাত্র চীনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি উত্তপ্ত বাণিজ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে দেশগুলো এখন বাণিজ্য চুক্তির জন্য তৎপর, যদিও বেইজিং এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক অবস্থান নিয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ বলেন, ‘বিশ্ব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, কিন্তু চীন বিপরীত পথে হাঁটছে।’
চীন ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আত্মকেন্দ্রিক বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, তারা এই বাণিজ্যযুদ্ধে শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যাবে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান গত বুধবার বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র নিজের, চীনের এবং বিশ্বের স্বার্থ উপেক্ষা করে এবং শুল্ক ও বাণিজ্যযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে চীনের প্রতিক্রিয়া শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’